top of page
Search

বাকিতে বিক্রয়

  • Writer: mmkhokan
    mmkhokan
  • Jan 26
  • 7 min read



পাড়ায় একটা মুদি দোকান নিয়ে বসলেন। ব্যাবসা ভালই চলছিল, কাস্টমারও বাড়ছে। কিন্তু সমস্যা হল অধিকাংশ কাস্টমার এলাকার পরিচিত হওয়ায় সবাই শুধু বাকিতে কেনাকাটা করে। কেউ সময়মত টাকা ফেরত দেয়, আবার কেউ দেয়না। চক্ষুলজ্জায় বার বার চাইতেও পারেন না। মাস শেষ হিসাবের খাতায় মুনাফার বড় একটা অংশ আটকে থাকে কাস্টমারের কাছে। পারছেন না নতুন মাল উঠাতে। অগত্যা দোকানের সামনে ঝুলিয়ে দিলেন “বাকি চাহিয়া লজ্জা দেবেন না”। তাতেও হলনা কাজ। মনে মনে ভাবছেন, বাকিতে মাল দেয়াই একটা খারাপ সিস্টেম, ব্যাবসা জন্য আসলেই বিরাট লস।


কিছুদিন পর সিদ্ধান্ত নিলেন গ্রোসারির পাশাপাশি ডেজার্ট এবং কোল্ড ড্রিংক্স আইটেম ও রাখবেন দোকানে। কিন্তু ডেজার্ট বা কোল্ড ড্রিংক্স রাখতে হবে একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়। সেজন্য লাগবে ১/২ টা রেফ্রিজারেটর। কিন্তু একটা ভাল মানের রেফ্রিজারেটরের দাম ই ত্রিশ হাজারের উপরে। এত টাকা তো আপনার কাছে নেই। তাছাড়া মূলধন সব আসবাবপত্র কিনতেই শেষ করে দেওয়াটাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।


ভাবছেন, ইশ! যদি বাকিতে ফ্রিজ কেনা যেত কিংবা কিস্তিতে! অবশেষে ওয়ালটনে পেয়ে গেলেন এই সুবিধা। দুইটা ফ্রিজ কিনে নিলেন কিস্তিতে। তারা কিছু কাগজ-পত্র এবং শর্ত দিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধাপে ধাপে বকেয়া পরিশোধ করতে হবে যা আপনার সাধ্যের মধ্যে। অবশেষে আপনি সব বকেয়া পরিশোধ করে দিলেন। 


এখন ভাবছেন, তাহলে বাকিতে মাল বিক্রয় করাও সবসময় খারাপ নয়। আপনার বাকিতে বিক্রয় পলিসিতে হয়ত ভুল ছিল কিংবা পলিসি নির্ধারণ করেন নি। 


ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষেত্রে বাকিতে বিক্রয় করার অনেক অসুবিধা থাকলেও বৃহৎ ব্যাবসা বা কোম্পানির জন্য অনেক সময় বাকির অলটারনেটিভ থাকেনা। কিন্তু সেজন্য তাদের কিছু পলিসি নির্ধারণ করতে হয়, টাকা ওঠানোর কৌশল জানতে হয়, বাকির কাস্টমার সিলেকশন করতে হয় এবং মাস শেষে সঠিক হিসাব নিকাশ করতে হয়।


বাংলাদেশে তৈরী পোশাক শিল্প সেই নব্বইয়ের দশকেই বাকির বীজ টা নিরবে বুনে দিয়েছিল। এই যে লাখ লাখ ডলারের লেনদেন হচ্ছে প্রতিদিন তা কি নগদেেই হয়? শুনে কি অবাক হবেন যদি বলি শিপমেন্টের ৯০ দিন পরে পেমেন্ট পাবেন। পোশাক শিল্পে পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে শিপমেন্ট পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হয় বাকিতে। 


বাকিতে বিক্রয়ের সুবিধাগুলো কি?


১/ কাস্টমার বৃদ্ধি


নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, এমন কোন ঘর নেই যে রেফ্রিজারেটর এর প্রয়োজন নেই। কিন্তু সবার কি সামর্থ্য থাকে এক দাগে পঁচিশ বা ত্রিশ হাজার টাকা খরচ করে একটা রেফ্রিজারেটর কিনবে? অনেকের মাসিক ইনকামই দশ হাজার এর উপরে নয়। কিন্তু সংসার শুরু করলেই লাগে একটা রেফ্রিজারেটর। এখন ধরুণ দুটো ফ্রিজ কোম্পানির একটি যদি বাকিতে কিংবা কিস্তিতে ফ্রিজ বিক্রয় করে। অন্য কোম্পানি নগদ ছাড়া বিক্রি করেইনা। তাহলে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো কোন কোম্পানির ফ্রিজ কিনবে? স্বাভাবিকভাবেই যে কোম্পানি বাকি বা কিস্তির অপশন রেখেছে।


একইভাবে উবার বিজনেসের জন্য মাইক্রোবাস কিংবা পাঠাও বিজনেসের জন্য বাইক কেনার জন্যও মানুষ চাইবে কিস্তিতে গাড়ি কিনতে। কারন এত টাকা একজন সাধারণ মানুষের থাকেনা একসাথে পরিশোধ করার জন্য।

এভাবেই সর্বস্তরের মানুষকে সুবিধা দিতে, বাকিতে বিক্রয় সিস্টেম কাস্টমার বৃদ্ধি করে থাকে।


২/ বিশ্বস্ততা অর্জন

বাকিতে ক্রয়ের সুবিধা দিচ্ছে এমন ব্যবসায়ী কিংবা কোম্পানির প্রতি কাস্টমারের আস্থা অনেক বেড়ে যায়। কাস্টমার ভাবে, বিক্রেতা তাকে বিশ্বাস করে সুবিধা দিচ্ছে, নিজের ব্যবসার ঝুঁকি নিয়েই। এভাবেই কাস্টমারের বিশ্বাস অর্জন হয় এবং তাতে দীর্ঘমেয়াদি কাস্টমার বৃদ্ধি পায়।আবুল মিয়ার মুদি দোকান থেকে যদি মাসিক ভিত্তিতে নিত্যপরয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা করে থাকে তাহলে এবং ভালো সেবা পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি কেনো অন্য দোকানদারের কাছে যাবেন? বিশ্বস্ততা তো এভাবেই অর্জন হয়। 


৩/ সেলস বৃদ্ধি

স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী কাস্টমার বৃদ্ধি মানেই সেলস বৃদ্ধি। বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি মানে ব্র‍্যান্ডিং বৃদ্ধি, প্রমোশনাল মার্কেটিং বৃদ্ধি। তাতে আল্টিমেটলি সেলস বাড়তে থাকে।


৪/ মুনাফা বৃদ্ধি

বেশি কাস্টমার মানেই বেশি সেলস। সেলস যত বাড়বে মুনাফাও তত বাড়তে থাকবে।


বাকিতে বিক্রয়ের অসুবিধাগুলো কি?


১/ ব্যবসার ঝুঁকি বাড়ে

কাস্টমারের কাছে আটকে থাকা টাকা গুলো উঠাতে না পারলে ব্যবসায় বিরাট একটা লসের সম্ভাবনা আছে। আপনার বিজনেস যত বড় হবে, এই লসের সম্ভাবনা তত বাড়তে থাকবে। অর্থাৎ আপনার ব্যবসার ঝুঁকি তত বাড়বে।


২/ লোনের ইন্টারেস্ট বাড়ে

অধিকাংশ মূলধন কাস্টমারের নিকট নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আটকে থাকলে, সময়মত আপনি ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারবেন না। তাতে ব্যাংকে আপনার ইন্টারেস্ট চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তে থাকবে।


৩/ ঋণের সম্ভাবনা বাড়ে

বাকিতে পড়ে থাকা মূলধন তুলতে না পারলে, নতুন মাল ক্রয় করতে আপনাকে বার বার ঋণ করতে হবে। 


৪/ ক্যাশ ফ্লো নষ্ট হয়

বাকিতে বিক্রয় মানে আপনার মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু টাকা গুলো নগদ/ক্যাশ আপনার হাতে নেই। এভাবে বাকিতে বিক্রয়ের কারনে ক্যাশ ফ্লো নষ্ট হয়।


৫/ বাড়তি কর্মচারী লাগে

বাকির টাকা গুলো তুলতে আপনার বাড়তি কর্মচারী লাগতে পারে। স্থায়ী কর্মচারী আপনার ফিক্সড কস্ট বাড়াবে। যে কারনে আপনার সেলস টার্গেট বাড়াতে হবে। অস্থায়ী কর্মচারী আপনার ভ্যারিয়েবল কস্ট বাড়াবে। তাতেও আপনার সেলস টার্গেট বৃদ্ধি করার একটা চাপ তৈরি হবে।


৬/ বাড়তি কাগজ-পত্র লাগে

ডেবিট এবং ক্রেডিট হিসাবের জন্য আপনাকে বাড়তি হিসাবের খাতা মেইনটেইন করতে হবে। নিয়মিত ডেবিট ক্রেডিট হিসাব প্লাস বা মাইনাস করে সেটা আপডেট রাখতে হবে। 


৭/ বাড়তি সময় নষ্ট হয়

বাকির হিসাব মেইনটেইন করা, কিংবা টাকা তুলে আনা, অথবা কর্মচারী তদারকি করা, সবকিছুর জন্যই বাড়তি সময় নষ্ট হবে।


৮/ হিসাবের গড়মিলের সম্ভাবনা বাড়ে

কখনো ডেবিট-ক্রেডিট হিসাব ব্যালেন্সিং করতে ভুলে গেলে দেখা দেবে হিসেবের গড়মিল। তাতে কত টাকা আপনার বাকিতে পড়ে আছে সেটা বের করা কঠিন হয়ে যাবে।


বাকিতে বিক্রয়ের আছে বিভিন্ন অসুবিধা। কিন্তু আপনি যদি বাকিতে বিক্রয় পলিসি মেইনটেইন করেন, তাহলে কিছু অসুবিধা কমিয়ে আনা সম্ভব। 

তাহলে বাকিতে বিক্রয়ের পলিসি কি?

বাকিতে বিক্রয়ের পলিসি নির্ধারণের মাধ্যমে আপনার ব্যবসার ঝঁকি কমে আসবে, বাকির জন্য সঠিক কাস্টমার নির্বাচনে সাহায্য করবে, টাকা উত্তোলন সহজ হবে এবং ক্যাশ ফ্লো ঠিক থাকবে। তাহলে জেনে নেয়া যাক পলিসি নির্ধারণ কিরবেন কিভাবে।


১/ বাকি নেয়ার জন্য কাস্টমারের যোগ্যতা

আপনি যাকে বাকিতে পণ্য দিতে চাচ্ছেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। তার বাকির পূর্ব ইতিহাস যাচাই করে দেখতে হবে। যদি তার স্বভাব এমন হয় যে, সে বাকি পরিশোধে উদাসীন কিংবা ইচ্ছা নেই, তাহলে সে বাকি নেয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত নয়।


২/ বাকির লিমিট নির্ধারণ 

আপনি ঠিক কত টাকা পর্যন্ত বাকি দিতে পারবেন সেটা ঠিক করে নিতে হবে। আপনার ক্যাশ ফ্লো ঠিক রাখার জন্য বাকির সীমা নির্ধারণ করা জরুরি। 


৩/ নগদ গ্রহনের পরিমান

হান্ড্রেড পার্সেন্ট বাকি না দিয়ে আপনি কিছু টাকা নগদ নিয়ে নেবেন। তারপর বাকি টাকা ধাপে ধাপে কিস্তিতে কিংবা অন্য কোন উপায়ে গ্রহণ করবেন তা নির্ধারণ করবেন।উদাহরণ স্বরুপ – কোনো কিছু কিস্তিতে কিনতে গেলে কিছু অর্থ ডাউনপেমেন্ট করা লাগে।  


৩/ বাকির শর্তারোপ

নিশ্চয়ই আপনি বাকি পরিশোধের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করবেন। এখন কাস্টমারকে নির্ধারিত সময়ের আগে বাকি পরিশোধে উদবুদ্ধ করতে কিছু শর্ত দিতে পারেন। যেমন, অগ্রিম বাকি পরিশোধের জন্য ডিসকাউন্ট কিংবা গিফটিং এর ব্যবস্থা রাখতে পারেন। বাকি টাকা কিভাবে গ্রহণ করবেন সেটা নির্ধারণ করে নিন। ব্যাংক নাকি বিকাশ নাকি ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি। 


৪/ কাস্টমার ইনফরমেশন 

আপনি যাকে বাকিতে মাল দিচ্ছেন তার বর্তমান ঠিকানার মেয়াদ জানুন। তা আপনার বাকি পরিশোধের সময়সীমার চেয়ে কম বা বেশি কিনা যাচাই করুন।যেমন, কোন কাস্টমার আপনার এলাকায় আছে মাত্র দুই মাস। তারপর অন্য জেলায় শিফট হবে। কিন্তু আপনার থেকে বাকিতে মাল ক্রয় করেছে ছয় মাসের শর্তে। তাহলে এই টাকা তুলতে আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। সেজন্য কাস্টমারের হাউজ কন্টাক্ট জেনে নিন। কাস্টমারের আয়ের উৎস জানা জরুরি এবং প্রয়োজনে ব্যাংকের ব্যালেন্স চেক করে নিন। কাস্টমার কি ধরনের বিজনেস করে সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। কাস্টমারের পার্সনাল ফোন নাম্বার, বাসার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা, কর্মস্থলের ঠিকানা, ব্যাংক/বিকাশ/ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট নাম্বার/জন্ম নিবন্ধনের কাগজ, অন্যান্য ভেনডরসদের সাথে বাকির চুক্তিপত্র, এই ইনফরমেশন গুলো নিয়ে নিন। কোন সমস্যায় পড়লে আইনী সহায়তা নিবেন বলেও জানিয়ে দিন। এগুলো কাস্টমারের ধোঁকা থেকে বাঁচতে আপনাকে সহায়তা করবে।


৫/ ডকুমেন্টেশন

অবশ্যই যেকোনো লেনদেন এর জন্য লিখিত চুক্তিপত্র কিংবা কাগজ-পত্র মেইনটেইন অন্যতম শর্ত। পাশাপাশি রাখতে হবে সাক্ষী। প্রতিটি লেনদেনের কাগজ-পত্রে থাকতে হবে দেনাদার, পাওনাদার এবং সাক্ষীর সাক্ষর। মৌখিক কথায় লেনদেন চলেনা। তাহলে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে আপনার:- 


রিসিট/ভাউচার-রশিদঃ


এখানে কাস্টমারের ফোন নাম্বার/ইমেইল; বাসার ঠিকানা; পণ্যের বিবরন ; পণের স্যাম্পল যেমন, কাপড়ের টুকরো; বকেয়ার পরিমান; নগদ পরিশোধের পরিমান; তারিখ; পরিশোধের সময়সীমা; বিক্রেতার ফোন নাম্বার;  দোকানের নাম; এই তথ্য গুলো দেয়া থাকবে। রিসিটের এক কপি ক্রেতা এবং আরেক কপি বিক্রেতার কাছে থাকবে। কিভাবে বাকির রিসিট/ভাউচার-রশিদ লিখতে হয় তা জানতে পড়ুন এই আর্টিকেল টি।


  • কাস্টমারের হাউজ কন্টাক্ট এর ফটোকপি।

  • কাস্টমারের জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট /জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি।

  • বকেয়া পরিশোধের ট্রানজেকশন মাধ্যম। যেমন, ব্যাংক একাউন্ট / বিকাশ একাউন্ট /নগদ একাউন্ট/ ক্রেডিট কার্ড/ ডেবিট কার্ড ইত্যাদির তথ্য লিখে নেয়া। 

  • বকেয়া পরিশোধ  কিস্তিতে হলে আলাদাভাবে চুক্তিপত্র গ্রহণ।

  • কাস্টমারের স্থায়ী ঠিকানা সংগ্রহ। 

  • কাস্টমারের কর্মস্থলের ঠিকানা সংগ্রহ। 

  • কোন শর্ত থাকলে তার চুক্তিপত্র গ্রহণ।

  • ডেবিট এবং ক্রেডিট বই খোলা।

  • ডেবিট-ক্রেডিট হিসাব নিয়মিত আপডেট করা।

  • অন্য ভেনডরসদের সাথে কাস্টমারের বাকি থাকলে তার তথ্যপত্র গ্রহণ।

  • কোন সমস্যায় আইনী সহায়তা গ্রহণের চুক্তি থাকলে তার লিখিত জবানবন্দি গ্রহণ।

  • কাস্টমারের এলাকার আইনী সহায়তা কেন্দ্রের তথ্য সংগ্রহ। 


বিক্রয় পলিসি তৈরির লিখিত স্যাম্পল দেখতে পড়ুন এই আর্টিকেল টি।


বাকিতে বিক্রয় পলিসি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন এই আর্টিকেল টি।

কীভাবে বাকি টাকা ওঠাবেন?

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাস্টমারগন বকেয়আ পরিশোধ না করার হিস্ট্রি নতুন কিছু নয়। অ্যামেরিকার প্রায় ৬০% কাস্টমার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করেনা। সুতরাং আপনি একা নন। তাই কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক খারাপ না করে কিভাবে সর্বোত্তম কৌশলে বকেয়া আদায় করা যায় তা জানতে হবে। বকেয়া পরিশোধের সময় পেরিয়ে গেলে তাকে বলে অভারডিউ( overdue) বা ফাস্ট ডিউ( Past due) ।


কাস্টমারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন,কিন্তু  বন্ধু বা দোস্ত বানিয়ে ফেলবেন না। তাতে মানুষ  সুযোগ সন্ধানী হয়ে উঠে। বিজনেস পার্সনালিটি বজায় রাখুন। প্রয়োজন সাপেক্ষে প্রফেশনাল হউন। ভারসাম্যপূর্ন সম্পর্ক না খারাপ হয়, না লেনদেনে গড়িমসি  তৈরি করে। 


ই-কমার্স বিজনেস হলে ইমেইল করুণ। ইমেইলের ভাষা যেন কঠোর না হয়, আবার একটু প্রফেশনাল ও হয়। ইমেইলে বকেয়া  মেমোর বিস্তারিত বর্ননা ছবি তুলে দিতে পারেন। কিভাবে ইমেইল করবেন তা বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেল টি পড়ুন। অফলাইনের কোন বিজনেস হলে, চিঠি পাঠাতে পারেন। চিঠির বিষয়বস্তু ইমেইলের মতই হতে পারে। ইমেইল বা চিঠি দিন অভারডিউ( overdue) পার হওয়ার বিজনেস ডে এর দুদিনের মধ্যে।


চিঠি বা ইমেইলেও কাজ না হলে সরাসরি ফোন দিয়ে কথা বলুন আরো কিছুদিন পর। কারন অনেক সময় চিঠি বা ইমেইল নাও পৌঁছাতে পারে। তাতেও কাজ না হলে বাসায় আপনি বিশস্ত কর্মচারী পাঠাতে পারেন এনসিউর হওয়ার জন্য উক্ত ব্যক্তি এলাকায় আছে কিনা।


কাস্টমারের সমস্যা জানার চেষ্টা করুণ। প্রয়োজনে মেয়াদ বাড়িয়ে দিন।


বকেয়া পরিশোধ করার জন্য এজেন্সির সহায়তা নিতে পারেন।


বকেয়ার পরিমান অনেক বেশি হলে প্রয়োজনে লিগ্যাল একশন নিন। যদি বুঝতে পারেন বকেয়া পরিশোধের ইচ্ছে নেই। তবে খুব বুঝে শুনে লিগ্যাল একশনে যাবেন। কারন আইনী কার্যক্রমেও আছে কিছু জটিলতা।


আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন এই আর্টিকেল টি।

বাকিতে বিক্রির খরচ হিসাব করেছেন তো?

বাকিতে বিক্রির হিসাব কিভাবে করতে হয় জানেন তো? তিনভাবে এই হিসাব করা হয়।

১/ মোট বকেয়া যোগ

প্রথমেই আপনি প্রতিটি বকেয়া হিসাব আলাদাভাবে যোগ করে নিবেন। কাস্টমারদের নাম এবং পণ্যের বিবরন সহ বিস্তারিত উল্লেখ করে। আপনি কত মাসের বকেয়া হিসেব করবেন তা নির্ধারণ করুণ। সেটা এক/তিন/ছয়/বারো মাসের জন্য হতে পারে।

২/ মোট সেলস থেকে বকেয়া বের করা

মোট সেলস বের করার জন্য পণ্যের সংখ্যার সাথে প্রতিটি পণ্যের দাম গুন করুন। তারপর নগদ টাকা সেখান থেকে বিয়োগ করুণ। তাহলে বকেয়া পেয়ে যাবেন।


যেমন, আপনি ১০০ টি শীতের শাল বিক্রি করলেন। প্রতিটির মূল্য ২০০/- টাকা করে। সুতরাং আপনি মোট ২০,০০০/- টাকার শাল বিক্রি করলেন। কিন্তু কাস্টমার আপনাকে প্রতিটি শালের জন্য নগদ ৫০/- টাকা করে পেইড করল। তাহলে আপনি ক্যাশ পেলেন ৫০০০/- টাকা। এখন ২০,০০০/- টাকা থেকে ৫০০০/- টাকা বাদ দিলে থাকে ১৫,০০০/- টাকা। তাহলে আপনি কাস্টমার থেকে পাবেন আরো ১৫,০০০/- টাকা।

এভাবে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মোট বিকেয়া হিসেব করবেন।

বাকিতে বিক্রির পরিমাণ –২০,০০০ – ৫,০০০ = ১৫,০০০ টাকা 


৩/ একাউন্টস রিসিভেবল হিসাব

আপনি একাউন্টস রিসিভেবল দিয়েও কাস্টমার থেকে পাওনা বকেয়া হিসাব করতে পারেন।


ধরুণ, বছরের শুরুতে পাওনা ২০,০০০/- টাকা। বছরের শেষে দেখলেন পাওনা টাকা ১০,০০০/- টাকা। এখন ক্যাশ ফ্লো এর হিসাব থেকে দেখলেন পুরো বছরে আপনি নগদ টাকা পেয়েছেন ৪০,০০০/- টাকা।


এখন ক্রেডিট সেলস এর সুত্রানুসারে,

ক্রেডিট সেলস= ক্যাশ – (শুরুতে পাওনা – শেষে পাওনা)

এই সূত্র ব্যবহার করে পাই,

ক্রেডিট সেলস/মোট পাওনা বকেয়া=

 ৪০,০০০-(২০,০০০- ১০,০০০)

=৩০,০০০/- 

অর্থাৎ বছর শেষে মোট পাওনা বকেয়া ৩০,০০০/- টাকা।বিস্তারিত হিসাব জানতে পড়ুন এই আর্টিকেল টি।

 
 
 

Commenti


Bangladesh Youth Enterprise Advice and Helpcentre (BYEAH)

Address

16/9 A, Block # F, Ring Road, Adabor, Dhaka - 1207

Email

Tel

+880176 494 0469

Follow us

  • Facebook
  • Twitter
  • LinkedIn
  • YouTube

Copyright © 2025 BYEAH | Powered by BYEAH

developed by mmkhokan

bottom of page